খেলাধুলা

ইউরোর ২য় সেমিফাইনাল : মর্যাদার লড়াইয়ে ডাচদের মুখোমুখি ইংলিশরা

জমজমাট প্রথম সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা স্পেন। আজ (বুধবার) রাতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। একদিকে বেলিংহাম-হ্যারি কেইন, অন্যদিকে ডাইক-গাকপো। শেষ হাসি হাসবে কারা? বাংলাদেশ সময় রাত একটায় শুরু হবে ম্যাচটি। 

১৯৬৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের পর আর কোনো বড় শিরোপা জেতা হয়নি ইংল্যান্ডের। অন্যদিকে ১৯৮৮ সালে ইউরো ট্রফির পর নেদারল্যান্ডস ৩৬ বছর ধরে শিরোপাখরায় ভুগছে। দুই দলের সেমিফাইনাল সে কারণেই হয়ে উঠেছে মর্যাদার লড়াই।

ডাচ দলে সাতজন ফুটবলার আছেন যারা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেন। ইংল্যান্ডে খেলার সুবাদে সে দেশের তারকাদের হাতের তালুর মতো চেনেন ডাচরা। সেই সব তথ্য নিশ্চয় মাথায় রয়েছে ডাচ কোচ রোনাল্ড কোম্যানের মাথায়।

১৯৮৮ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নেদারল্যান্ডস। সেই দলের ডিফেন্স সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন রোনাল্ড কোম্যান। ফাইনালে সব আলো কেড়ে নেন মার্কো ভ্যান বাস্তেন। এবার ডাচ দলের কোচ কোম্যান। ফুটবলার হিসেবে ইউরো জয়ের পাশাপাশি কোচ হিসেবেও এই টুর্নামেন্ট জেতার হাতছানি তার সামনে। দারুণ ফর্মে রয়েছেনতার দলের গাকপো। ডিফেন্সে দুর্ভেদ্য ভ্যান ডাইক। তবে মাঝমাঠ আরও সংঘবদ্ধ হতে হবে নেদারল্যান্ডসের। ডিপে-সিমন্সদের অফ ফর্ম চিন্তায় ফেলতে পারে রোনাল্ড কোম্যানকে।

এদিকে, চলতি ইউরোয় ইংল্যান্ড নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। গ্রুপে দুটি ড্র এবং একটি জয়ে শেষ ষোলোর দরজা খোলে ইংলিশরা। স্লোভাকিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড উঠলেও তাদের পারফরম্যান্স তেমন নজরকাড়া ছিল না।

সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে সেমির লড়াইয়ে বেশ চাপে ছিল ইংল্যান্ডই। শেষমেশ টাইব্রেকারে জিতে শেষ চারের ছাড়পত্র পেয়েছে ইংল্যান্ড। ইংলিশ গোলকিপার পিকফোর্ড বারের নীচে দুরন্ত হয়ে ওঠেন। সাকা-বেলিংহ্যামরা সঠিক সময়ে জ্বলেও ওঠেন। ২০২০ সালে ইউরোর ফাইনালে উঠেও খালি হাতে ফিরতে হয় ইংল্যান্ডকে। এবার শিরোপা নিয়েই ফিরতে চান সাউথগেট। তার আগে অবশ্য জিততে হবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেমিফাইনাল।

কেইন বনাম ফন ডাইক লড়াই

ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন এখনো পর্যন্ত ইউরোর এবারের আসরে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জার্মান লিগে খেলার অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে পারছেন না। অথচ প্রথম মৌসুমে বায়ার্নের হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ৩৬ গোল করেছেন। পিঠের ইনজুরি নিয়ে মৌসুম শেষ করার পর কেইন কোনোভাবেই আর শতভাগ ফিটনেস ফিরে পাননি। যা ইউরোতে তার পারফরমেন্সে দৃশ্যমান। সেমিফাইনালের ম্যাচে তাকে লিভারপুলের ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইকের বিপক্ষে লড়তে হবে। দীর্ঘদেহী এই ডাচম্যানও নিজেকে প্রমানে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু তারপরও পুরো দলের মত নক আউট পর্বে দারুণ খেলেছেন ফন ডাইক।

ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও অবশ্য তার দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকারকে যতটা সম্ভব মাঠে রাখতে চাচ্ছেন। আগের ম্যাচগুলোতেও ইংলিশ বস সেটাই করেছেন। তবে ডাচ রক্ষণভাগ ভেঙ্গে কেইন এবার কতটা এগিয়ে যেতে পারবেন তা সময়ই বলে দেবে।

সাউথগেট বনাম কোম্যান লড়াই

সেমিফাইনালের ফলাফলের ওপর দুই কোচের খেলোয়াড় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বড় প্রভাব ফেলতে পারে। শেষ আটের নিজ নিজ ম্যাচে যা প্রমান হয়েছে।সাউথগেট লুক শ’কে মাঠে নামিয়ে সুইসদের বিপক্ষে ১০ মিনিটের মধ্যে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান। এ ছাড়া ইভান টনি, ট্রেন্ট আলেক্সান্দার আর্নল্ড ও কোল পালরমারকে বদলি বেঞ্চ থেকে একসাথে উঠিয়ে আনেন, যাদের গোলে ইংল্যান্ড পেনাল্টিতে ৫-৩ গোলের জয় পায়।

অন্যদিকে, ১৯৮৮ ইউরো জয়ী নেদারল্যান্ডস দলের অধিনায়ক কোম্যান তুরষ্কের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ওট উইগর্স্টকে মাঠে নামিয়ে ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। আজকের গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়েও ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে এ দুজনের কৌশল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading