পুরান ঢাকার হাটে চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি গরুর
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে জমে ওঠেছে রাজধানীর ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকার পশুর হাট। রায়সাহেব বাজার-ধোলাইখাল-দয়াগঞ্জ মোড়জুড়ে বসেছে এ হাটটি।
শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরের পর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, হাটে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি।
ক্রেতা–বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার ছোট মাঝারি গরুর দাম গড়ে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা বেশি।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এই হাটে কোরবানির পশুর সরবরাহ বেশি আছে। সে তুলনায় ক্রেতা কম। অপরদিকে ক্রেতাদের ভাষ্য, গত বছরের চেয়ে এবার গরুর দাম বেশি।
ফরিদপুর থেকে ১৭টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন আকরাম খাঁ। তিনি বলেন, গত বছরে ২৮টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছিলাম। বিক্রি হয়েছিল ২০টি আর বাকি ৮টি ফেরত নিয়ে যেতে হয়েছে। বিক্রি করে লাভের আশায় গতবার ৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এ বছর আবার লোকসান হলে ঋণ পরিশোধের জন্য জমি বিক্রি করতে হবে। গরুর হাটে ১৭টি ষাঁড় নিয়ে এসেছি। একেকটার দাম ১ লাখ ১০ থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা।
ফরিদপুর থেকে গরুর হাটে শখের বসে পালন করা ৩টি গরু নিয়ে এসেছেন রুবেল মিয়া। সাড়ে তিন মণের বেশি ওজনের ২টি গরুর দাম চাচ্ছেন ৭ লাখ টাকা। তিনি বলেন, এবারই প্রথম হাটে এসেছি, এখনো তেমন বেচাকেনা চোখে পড়েনি। আশা করছি, আজকালের মধ্যে গরু ৩টি বিক্রি করে বাড়ি চলে যেতে পারব।
পাবনা থেকে হাটে ছোট আকারের ৩৭টি গরু নিয়ে এসেছেন মাহমুদ। এর মধ্যে একটি গরু বিক্রি করেছেন ৯৩ হাজার টাকা। এসব গরুর দাম লাখের নিচে বলে জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জের গরু ব্যবসায়ী লতিফুল বলেন, আমি ১ লাখ ২০ হাজার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দামের ২২টি গরু নিয়ে এসেছি। যার মধ্যে একটি দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেছি।
হাটে গরু কিনতে আসা ইসলামপুরের বাসিন্দা সাদাফ বলেন, মাঝারি আকারের একটি গরু কিনেছি ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা দিয়ে। এখানেই বাড়ি তাই ঝামেলা এড়াতে আগেই কিনেছি।
ওয়ারীর বাসিন্দা রাহাত হোসেন বলেন, ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকায় গরু কিনেছি। দুইদিন আছে ঈদের, এই কদিন গরুকে লালন পালন করব সেজন্য খড় ভুসিও সংগ্রহ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি।
ধোলাইখাল হাটের ইজারাদার আসফাক আজীম বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। আমরাও আলাদা মনিটরিং সেল গঠন করেছি। কারো কোনো কিছুতে সমস্যা হলে মাইকে ঘোষণা করে সমাধান করা হচ্ছে। বাজারে ক্রেতারা কোনো নগদ টাকা না নিয়ে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পশু ক্রয় করতে পারছেন। বিক্রির টাকা থেকে আমরা ৫ শতাংশ হাসিল নিচ্ছি।