ধর্ম

স্ট্রোকের রোগী নামাজ পড়বেন কীভাবে?

নামাজের বাহির এবং ভেতরে মোট ১৩টি ফরজ রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ হলো দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া।

দাঁড়াতে সক্ষম ব্যক্তি বসে নামাজ আদায় করলে তার নামাজ শুদ্ধ হবে না বলে অভিমত দিয়েছেন ফুকাহায়ে কেরাম। তবে যে ব্যক্তি অসুস্থতার কারণে কিংবা বয়স বেশি হওয়ার কারণে দাঁড়াতে অক্ষম সেই ব্যক্তি বসে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

কেউ যদি বসেও নামাজ পড়তে না পারার মতো অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে এমন ব্যক্তি শুয়ে ইশারায় যেভাবে সম্ভব নামাজ আদায় করে নেবেন।

এক হাদিসে রাসূল সা. বলেন, ‘দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো, যদি না পারো তাহলে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো, তাহলে ইশারা করে নামাজ আদায় করো। (বুখারি, হাদিস : ১০৫০)

হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এমন সময় একদিন বিলাল রা. নামাজ আদায়ের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ডাকতে আসলেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবু বকরকে নামাজ পড়াতে বলো। ফলে আবু বকর রা. সে কয়দিনের নামাজ আদায় করালেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন একটু সুস্থতা মনে করলেন। তিনি দু’ সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে দু’পা মাটির সাথে হেঁচড়িয়ে নামাজের জন্যে মসজিদে আসলেন…

তিনি আবু বকর রা.-এর বাম পাশে বসে গেলেন। আর আবু বকর রা. দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে বসে নামাজ আদায় করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৮৭-৭১৩, মুসলিম, হাদিস : ৪১৮)

কোনো ব্যক্তি যদি অজ্ঞান হয়ে পড়ে তাহলে তার নামাজের বিধান হলো—

অজ্ঞান অবস্থায় এমন ব্যক্তির লাগাতার ৬ ওয়াক্ত কিংবা তার চেয়ে বেশি নামাজ ছুটে গেলে— তা কাজা করতে হয় না। নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. দুই দিন অজ্ঞান ছিলেন, কিন্তু ওই সময়ের নামাজ কাজা করেননি। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ৬৬৬২)

ইবরাহিম নাখায়ি রহ. থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন- ‘এক দিন এক রাত অজ্ঞান থাকলে, নামাজ কাজা করবে। এর চেয়ে বেশি হলে কাজা করবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ৬৬৫৪)

স্ট্রোকের রোগী যদি এমন হয় যে ট্রোকের পর তার আর কোনো হুঁশ না থাকে। নিজে নিজে কিছু করতে না পারে তাহলে তার জন্য নামাজের বিধান নেই। কারণ, নামাজের জন্য মস্তিস্ক সুস্থ থাকা শর্ত।

আলেমদের মতে, কোনো স্ট্রোকের রোগী যদি স্ট্রোক করার পর আর পূর্ণ জ্ঞান ফিরে না পায় এবং কোনো কিছু ঠিকমতো মনে রাখতে না পারে। নামাজের রাকাত সংখ্যা, রুকু-সিজদার হিসাব রাখতে না পারেন তাহলে একেবারে অস্বাভাবিক অবস্থার কারণে তার ওপর নামাজ ফরজ নয় এবং এর কারণে তাকে ফিদয়া  দিতে হবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading