রাজশাহীতেই এখন থেকে তৈরি হবে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট ব্যাট। যে ব্যাট শোভা পাবে দেশি-বিদেশি তারকা খেলোয়াড়দের হাতে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ক্রিকেট ব্যাট তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। ‘এমকেএস স্পোর্টস’ নামের ব্যাট তৈরির কারখানাটি আইসিসির অনুমোদন পাওয়ায় উচ্ছ্বাসিত সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী নগরীর বাররাস্তার মোড় এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে এমকেএস স্পোর্টস নামের ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানা। এই কারখানাটিতে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট ব্যাট তৈরির সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা। ব্যাট তৈরির মূল উপাদান কাঠ ইংলিশ উইলো আনা হচ্ছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের অপেক্ষা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হবে কারখানাটির।
জানা গেছে, কারখানা তৈরির স্বপ্নটা রাজশাহীর ছেলে হুসাইন মোহাম্মদ আফতাব শাহিনের হলেও সেই স্বপ্নটা ডানা মেলেছে ইমরুল কায়েস ও মেহদী হাসান মিরাজের হাত ধরে। এই দুজন ক্রিকেটার আফতাবের স্বপ্ন পূরণের সারথি হন। ব্যাট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘এমকেএস স্পোর্টস’ পেয়েছে আইসিসির স্বীকৃতি। এখন থেকে দেশ-বিদেশের ক্রিকেটারদের ব্যাটে শোভা পাবে কোম্পানিটির লোগো।
হুসাইন মোহাম্মদ আফতাব শাহিন বলেন, গেল সোমবার আইসিসির পক্ষ থেকে পত্র দিয়ে অনুমোদনের ব্যাপারটি জানানো হয়। এই সুখবরটি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন ইমরুল কায়েস। এরপরে মূলত বিষয়টি জানাজানি হয়। আমাদের ব্যাটের স্টিকার দিয়ে খেলতে হলে আইসিসির অনুমোদন লাগত। ওদের কিছু গাইডলাইন আছে। সেগুলো ছাড়া স্পন্সর সম্ভব হতো না। বেশ কিছু দিন আগেই আইসিসির কাছে আবেদন করেছিলাম। তারা কিছু ডকুমেন্ট চেয়েছিল। সেগুলো তাদের কাছে মেইলে পাঠিয়েছিলাম। এখন থেকে চাইলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের স্পন্সর হতে পারব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যাট তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেলাম। তাও আবার রাজশাহীতে। অনেক অপেক্ষার ফল এটি। বিষয়টি সত্যিই আনন্দের। ইমরুল ও মিরাজ ভাই সবাই আছেন আমার সঙ্গে। তারাও খুব উচ্ছ্বসিত। রাজশাহীর এই কারখানা থেকে আমরা আন্তর্জাতিক মানের ব্যাট তৈরি করব। আমাদের দেশের টেনিস বলে খেলার অনেক প্লেয়ার রয়েছে। এখানে টেনিস বলে খেলার মতো ব্যাট তৈরি করা হবে। আমরা সব বিষয়গুলো মাথায় রেখে আগাচ্ছি। আশা করছি অনেক ভালো কিছু হবে।
শাহিন আরও বলেন, ২০০৫ সালের দিকে রাজশাহীতে প্রিমিয়ার লিগের খেলা চলছিল। সেই খেলায় অংশ নিয়েছিলেন পাকিস্তানের আজহার মাহমুদ। তার ব্যাটে সমস্যা হওয়ায় খালেদ মাসুদ পাইলট আমাকে ফোন দিয়ে স্টেডিয়ামে যেতে বলেন। সেখানেই প্রথম আজহার মাহমুদের সঙ্গে তার দেখা হয়। এরপর আজহার মাহমুদের ব্যাট ঠিক করে দেই। পরে তার ঠিক করা ব্যাট দেখে খুশি হয়ে ১০০ ডলার উপহার দিতে চেয়েছিলেন আজহার মাহমুদ। তবে তা ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। শুধু আজহার মাহমুদই নন, তার কাছে ব্যাট ঠিক করে নিয়েছেন সেকেন্দার রাজাও।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের রাজশাহীর কাউন্সিলর তৌহিদ আল মাসুদ রনি
বলেন, আইসিসির অনুমতি পেয়েছে এটা আমাদের জন্য সুখবর। সব থেকে বড় সুখবর যা আমাদের রাজশাহীতে এমন একটি কারখানা আছে। এই কারখানায় তৈরি ব্যাটগুলো দিয়ে বিশ্বমানের খেলোয়াড়রা খেলবে। এটা অনেক বড় উদ্যোগ। আমি মনে করি এটার মাধ্যমে আমাদের দেশের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।