স্বামীর সাথে বনিবনা না থাকায় এবং অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হলেন ঝিনাইদহ শহরের এক অভাবগ্রস্ত মা। গর্ভবতী অবস্থায় স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি মায়ের বাড়িতে চলে যান। এর পর চরম অর্থাভাবে পড়েন কোকিলা খাতুন। কোকিলা খাতুনের মা ঝিনাইদহ শহরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ইতোমধ্যে কোকিলা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে কালীগঞ্জ শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করেন আনোয়ারা খাতুন। গত ২৮ নভেম্বর একটি ছেলে শিশু সন্তানের জন্ম দেন কোকিলা।
কিন্ত অর্থাভাবে সেই ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে না পেরে সন্তান বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন কোকিলা বেগম। পরে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ ও নগদ ৩০ হাজার টাকায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের হেলাই গ্রামের সোহাগ হোসেনের কাছে সন্তানকে বিক্রি করে দেন।
এ ঘটনা জানতে পেরে সন্তানকে ফিরে পেতে বৃহস্পতিবার সকালে থানায় এসে অভিযোগ করেন কোকিলা খাতুনের স্বামী আকাশ হোসেন। এরপর পুলিশ কালীগঞ্জ উপজেলার হেলাই গ্রাম থেকে নবজাতককে উদ্ধার করেন। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আজিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উদ্ধার হওয়া নবজাতকের মা কোকিলা খাতুন বলেন, অভাবের তাড়নায় ও খোঁজখবর না নেওয়ায় স্বামীর ওপর অভিমান করে ৭ দিন বয়সী শিশু ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছি। স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করার কারণে সে আমার কোনো খোঁজ খবর নেয় না। ক্লিনিকের সব খরচ মেটাতে এ ছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিল না।
শিশুটিকে দত্তক নেওয়া সোহাগ আলী বলেন, আমি নিঃসন্তান। শিশুটিকে লালন-পালনের জন্য তার মায়ের কাছ থেকে কিনেছি। শিশুর মা ও নানি আনোয়ারা খাতুনসহ এলাকার স্থানীয় কয়েকজনের উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে শিশুটির ক্লিনিকের খরচ ও তার মাকে নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৫৫ হাজার টাকায় কিনেছি। পরে পুলিশের নির্দেশেই শিশুটিকে তার মাসহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছি।