নোয়াখালীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ত্রাণ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
নোয়াখালীর কবিরহাটের সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. একরামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আনা ত্রাণসামগ্রীর ৬০০ প্যাকেট ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই সময় তার অনুসারীরা এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম ও আরেকজনকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনী ও কবিরহাট থানার একদল পুলিশ ছিনিয়ে নেওয়া ত্রাণগুলো উদ্ধার।
এর আগে, একই দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের কালামুন্সি বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটক মো. সৌরভ (১৮) উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের দই বাড়ির জাহের হোসেনের ছেলে ও একরামের অনুসারী। এই ঘটনায় একরামকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করে উপজেলা বিএনপি।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির।
হামলায় আহত শিক্ষার্থী তাসরিফউর রহমান নিহাদের (১৬) ভাষ্য, নিজ এলাকার বন্যাদুর্গতদের জন্য ৬০০ প্যাকেট ত্রাণ সংগ্রহ করে গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপজেলার কালামুন্সি বাজারে আসেন। তখন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একরাম নানা অজুহাতে ত্রাণগুলো ছিনিয়ে নিয়ে সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখে। সেই সময় বাধা দিলে একরাম অনুসারী ছাত্রদল নেতা সোহেলের নেতৃত্বে সৌরভ, রিফাত, নোমান ও বাপ্পী ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মো. মাইন উদ্দিন আকাশ (১৬) নামে এক ছাত্রকে কুপিয়ে জখন করে। ব্যাপক মারধর করে নিহাদকেও। পরে ছাত্ররা বিষয়টি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে আসে। একপর্যায়ে তারা ত্রাণসামগ্রী উদ্ধার করে।
কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা হয়েছে। দলীয় বৈঠকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তিনি আরও বলেন, ওই ত্রাণ বিতরণের সঙ্গে ছাত্রলীগের কয়েকজন ছিলেন, যারা ৫ আগস্টের আগে আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. একরাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ত্রাণগুলো উদ্ধার করে। এরপর যাদের ত্রাণ তাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের লোক দিয়ে ত্রাণগুলো বিতরণ করে।
কবিরহাট থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ত্রাণ নিয়ে একরাম ও তার অনুসারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ছাত্রদের আনা ত্রাণসামগ্রী উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে সৌরভ নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। পরে তারা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে আটক সৌরভকে তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়। এই ঘটনায় থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।