আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা, হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ্যে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় হামলাকারীর পরিচয় সামনে এসেছে। হামলাকারীকে টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও আহত করার পর অভিযুক্ত ওই হামলাকারী মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। মার্কিন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রোববার (১৪ জুলাই) নিজেদের লাইভ আপডেটে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, স্থানীয় সময় শনিবার পেনসিলভানিয়ায় একটি সমাবেশে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে এই হামলা হয়। এই হামলাকে মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।

ডেইলি মেইল বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টাকারী বন্দুকধারীর নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস বলে জানা গেছে। মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টই প্রথম ক্রুকসকে হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত করে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-ও আনুষ্ঠানিকভাবে হামলাকারীর নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস বলে জানিয়েছে।

পেনসিলভানিয়ার বেথেল পার্কের বাসিন্দা ২০ বছর বয়সী এই যুবক সমাবেশের মঞ্চ থেকে ১৩০ গজ দূরে একটি ভবনের ছাদ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে কমপক্ষে আটটি গুলি ছুড়েছেন।

মূলত ২০ বছর বয়সী এই বন্দুকধারীই শনিবার পেনসিলভানিয়ার সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টায় গুলি করে আহত করে। সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট হাজার হাজার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সময় ১৩০ গজ দূরে একটি ভবনের ছাদ থেকে এআর রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণ করে হামলাকারী।

সঙ্গে সঙ্গে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট নিচে লুটিয়ে পড়ে নিজেকে আড়াল করেন। এসময় সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা তার পাশেই ছিলেন। এরপর তাকে স্টেজ থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রাম্পকে যখন ধরে স্টেজ থেকে নামানো হচ্ছে, সেই সময়ই কানের পাশ, গালে রক্ত লক্ষ্য করা যায়। স্টেজ থেকে নামার সময় হাত উঁচিয়ে, মুঠো করে হার না মানার ইঙ্গিত করে দেখান ট্রাম্প।

ডেইলি মেইল বলছে, ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে অন্তত আটটি গুলি চালানো হয় এবং এসময় সেখানে উপস্থিত জনতাও আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন। হামলার পরপরই বেশ দ্রুতই সিক্রেট সার্ভিসের এজন্টরা তাকে ঘিরে ধরেন এবং পরে তাদের সাহায্যে ট্রাম্প উঠে দাঁড়ান।

তাকে মঞ্চ থেকে সরিয়ে নেওয়ার সময় ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ করে হাত ওপরে তোলেন এবং ‘লড়াই, লড়াই, লড়াই’ বলে চিৎকার করেন। পরে তাকে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, তিনি ভালো আছেন।

আক্রমণকারীর গুলিতে সমাবেশে অবস্থানরত একজন ব্যক্তিও নিহত হন। এরপর মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে নিহত হন ওই হামলাকারী। ভয়ঙ্কর এই ঘটনায় উঠছে নানা প্রশ্ন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের বিপুল উপস্থিতি সত্ত্বেও কীভাবে সাবেক একজন প্রেসিডেন্টের ওপর হামলাকারী গুলি চালানোর সুযোগ পেল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্পকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল এবং এটি ছিল গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা।

মূলত আগামী নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ট্রাম্প। নির্বাচনের প্রচারে শনিবার বাটলার শহরে গিয়েছিলেন তিনি।

সেখানে অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য দিতে ওঠার পরই একপর্যায়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading