গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। কেননা স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন বাস্তবায়ন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এজন্য শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক পাঠদান নিশ্চিতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিস্তৃত করা হয়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের সিনেট হলে ২৬তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে সিনেট চেয়ারম্যানের অভিভাষণে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের সামনে একমাত্র পথ-সঠিক পদক্ষেপ ও পরিচর্যার মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো। এর জন্য প্রয়োজন শ্রেণিকক্ষে মানসম্মত শিক্ষক, শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, পরিমার্জিত কারিকুলাম, যুগোপযোগী বিষয়সমূহ প্রবর্তন, নতুন নতুন দক্ষতাভিত্তিক কোর্স প্রবর্তন এবং উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা।
উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর শিক্ষার্থীর জন্য বিকল্প দক্ষতাভিত্তিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের মূল্যবোধকে ধারণ করবে এমন দৃঢ় বিশ্বাসের ভিত গড়ে তুলতে হবে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ, সৃজনশীল, সত্য ও ন্যায়পরায়ণতার সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা আবশ্যক। আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বে আদর্শগত নেতৃত্ব দেবার জায়গায় দেখতে চাই। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের সামনে দাঁড়িয়ে কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁদের স্বপ্নকে বাস্তবায়নে অদম্য গতি, সাহসিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই। সেজন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ অবশ্য পাঠ্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধকতা আমাদের আছে, সমস্যাও আছে বহুমুখী। কিন্তু সেসব উত্তরণে আমাদের নিজস্ব শক্তি, নেতৃত্ব ও ভিত্তি ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের নিরন্তর অনুপ্রেরণা। তার আত্মত্যাগ, সাহসিকতা, সত্য ও সুন্দরের পথে দৃঢ়তা আমাদেরকে বারংবার নতুন প্রাণশক্তি দেয় সামনে এগিয়ে চলার। তারই কন্যা আমাদের প্রধান অগ্রসৈনিক, গণতান্ত্রিক ভিত-বুনিয়াদের কারিগর, জাতিরাষ্ট্রের মানস ও জীবনীশক্তি সৃষ্টির পেছনের প্রধান ব্যক্তিত্ব।
সিনেটের অধিবেশনে বাজেট ঘোষণা করেন ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার। তিনি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করেন সর্বমোট ২০৯৭ কোটি ৩১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। প্রস্তাবিত এ বাজেটের মধ্যে রাজস্ব বাজেটে ৭২১ কোটি ৬৪ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ১৩ হাজার ৭৫ কোটি ৬৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বাজেট দীর্ঘ আলোচনা শেষে সিনেট কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া সিনেট অধিবেশনে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ৫৬৪ কোটি ৫০ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদিত হয়।
এছাড়া সিনেট অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নের বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য তুলে ধরেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ. বি. তাজুল ইসলাম, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. মোতাহার হোসেন, মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, এস. এম. কামাল হোসেন, সাজ্জাদুল হাসান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ার মুহাম্মদ হুমায়ূন কবির প্রমুখ।