রাজনীতি

কোটাবিরোধীতায় অশুভ শক্তি নেমেছে : ওবায়দুল কাদের

কোটাবিরোধীতায় অশুভ শক্তি নেমেছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি বলেন,আমাদের কাছে তথ্য আছে, ২০১৮ সালে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়, তখন এই রাজনৈতিকভাবে পরাজিত অশুভ শক্তি কোটার ওপর ভর করেছিল এবং সড়কে যে আন্দোলনে ভর করে রাজনৈতিক রূপ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তখন এই অশুভ শক্তির হাতে আমাদের ধানমন্ডি পার্টি অফিসও আক্রান্ত হয়। ওই মহলটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করার জন্য এবং এদের ইতিহাস ঐতিহ্যেরর প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরির ক্ষেত্রপ্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল।

শনিবার (১৩ জুলাই) ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তারুণ্যের শক্তিতে আস্থা রাখি, আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের সবাইকে নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে সমান সুযোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।

সংবিধানের বা আদালতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’

সংবিধানের বাইরে গিয়ে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই দাবি করে কোটাবিরোধীদের আইনের মাধ্যমে দমন করার ইঙ্গিত দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও অনেক বক্তব্য আমাদের সংবিধানের, সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিরোধী। সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনা তার আলোকেই হবে।

‘রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে সব নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র। সেখানে আরও বলা হয়েছে, মানুষের সামাজিক অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্য নিরোধের জন্য নাগরিকদের মধ্যে সুষম বণ্টন এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

তিনি আরও বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে, জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অথচ গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হতাশাজনকভাবে কমেছে।

‘কোটা না থাকায় পুলিশে মাত্র চারজন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছে, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছে দুজন। ৫০টি জেলায় নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ পায়নি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পায়নি। সংবিধানের উল্লিখিত বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাতে সরকারি চাকরিসহ সব ক্ষেত্র সবাই যেন সমানভাগে সুযোগ পায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে। সেজন্যই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশে কোটা সবচেয়ে কম দাবি করে কাদের বলেন, ‘বিসিএস পরীক্ষা নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় নিয়োগ প্রায় ৭০ শতাংশের মত,  ৩৩, ৩৪, ৩৫ এই তিনটি বিসিএসে ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যেখানে কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ২৮ শতাংশ। শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে সেখানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই।’

‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই কোটার ভিক্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে কোটায় ভারতে ৬০%, পাকিস্তানে ৯২.৫ %, নেপালে ৪৫%, শ্রীলঙ্কায় ৫০%। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, আমাদের আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন রয়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading