খেলাধুলা

যে কারণে আগে থেকেই নির্ধারিত সুপার এইটের গ্রুপিং

যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের আরও ১১ ম্যাচ বাকি। তবে এরই মাঝে ক্রিকেটবিশ্বের নজর সুপার এইটে। ইতোমধ্যে পাঁচটি দেশ পরের রাউন্ডের টিকিট কেটেছে, বাকি তিন দল হতে পারে ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। দুয়েকদিনের মাঝেই বিশ্বকাপের সেরা আটদল চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তবে কারা কোন গ্রুপে পড়বে, সেটি নির্ধারিত হয়েছে টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই। কীভাবে নির্ধারিত হলো এই গ্রুপিং প্রক্রিয়া ও এর পেছনেই কারণই বা কি সেটি এই প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক।

প্রথমবারের মতো এবার ২০ দলের অংশগ্রহণে চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আইসিসির লক্ষ্য অধিক দেশের অংশগ্রহণ ও যুক্তরাষ্ট্রে টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে ক্রিকেটের বিশ্বায়ন ঘটবে। সেই পরিকল্পনা কতটুকু কাজে আসবে, সেই আলোচনা সময়ের হাতেই তোলা থাক। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এবার বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। আমেরিকা থেকে একেকটি ক্যারিবীয় দ্বীপের অবস্থানও বেশ দূরবর্তী। যেখানে যাতায়াত ও ম্যাচ দেখতে টিকিট কাটাসহ বেশকিছু বিষয়ে সুবিধা করে দিতে পারে আগেই নির্ধারিত সুপার এইটের গ্রুপিং।

যেভাবে হলো সুপার এইটের গ্রুপিং
২০ দলকে এবার প্রথম রাউন্ডে ভাগ করা হয়েছিল চারটি গ্রুপে। সেখান থেকে সেরা দুটি করে দল মিলিয়ে আট প্রতিযোগী নিয়ে হবে সুপার এইট রাউন্ড। যেখানে ৮টি দলকে আবার দুই গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। তবে গ্রুপ পর্বের অবস্থানের ভিত্তিতে নয়, গত দুই আসরের মতো পূর্বনির্ধারিত সিডিং অনুযায়ী ঠিক হবে সুপার এইটের গ্রুপ। চার গ্রুপের শীর্ষ বাছাই ধরে নিয়ে সুপার এইটের জন্য আগেই একটি সিডিং করা আছে। যেমন ‘এ’ গ্রুপ থেকে ভারত ও পাকিস্তান যথাক্রমে ‘এ১’ ও ‘এ২’। তাদের টপকে যদি অন্য কোন দল সুপার এইটে ওঠে, তাহলে সেই দল পাবে বাদ পড়া দলের সিডিং নম্বর।

পাকিস্তান প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় তাদের সুপার এইটে যাওয়া এখন সংশয়ে। তাদের বদলে যদি যুক্তরাষ্ট্র সুপার এইটে যায় তবে তারা পাবে ‘এ২’ সিডিং, অর্থাৎ সুপার এইটের গ্রুপ টুতে স্থান হবে তাদের। আবার বাংলাদেশের গ্রুপ ‘ডি’-তে র‍্যাঙ্কিং বিচারে সিডিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ‘ডি১’, শ্রীলঙ্কাকে ‘ডি২’ ধরা হয়েছে। লঙ্কানদের বিদায়ের পর টাইগাররা সুপার এইট নিশ্চিত করলে তাদের সিডিং হবে ‘ডি২’। তারা পড়বে গ্রুপ ওয়ানে ভারত, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। ওই গ্রুপে তৃতীয় দল হিসেবে টিকিট কেটেছে আফগানিস্তানও। ‘সি১’ সিডিং ছিল নিউজিল্যান্ডের, ‘সি’ গ্রুপ থেকে তাদের বিদায় ও আফগানদের সুপার এইট নিশ্চিত হওয়ায় রশিদ খানরা উঠলেন ‘সি১’ হিসেবে।

অন্যদিকে, সেরা আটের দুই নম্বর গ্রুপে জায়গা নিশ্চিত করেছে ‘সি২’ সিডিং নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ‘ডি১’ সিডিং নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ ছাড়া র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে ‘এ’ গ্রুপ থেকে ‘এ২’ সিডিং ছিল পাকিস্তানের। পাকিস্তান ‘এ২’ সিডিং নিয়ে উঠতে না পারলে, সেই অবস্থান নিয়ে দুই নম্বর গ্রুপে উঠবে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের আরেক সঙ্গী হতে পারে ‘বি১’ সিডিংয়ে থাকা ইংল্যান্ড, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে স্কটল্যান্ডের লড়াই চলছে। যেখানে ইংলিশরাই এগিয়ে, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর মতো অবিশ্বাস্য কিছু করতে পারলে তাদের বাদ দিয়ে স্কটিশরা উঠবে ‘বি১’ সিডিং নিয়ে।

যে কারণে গ্রুপিং নির্ধারিত হয়েছে আগেভাগে:

এবারই প্রথম বিশ্বকাপের পরের রাউন্ডে কে কোন গ্রুপে পড়বে সেটি নির্ধারিত হয়নি। এর আগে আরও চারটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর ২০০৭, ২০০৯, ২০১০ ও ২০১২ সালে একইভাবে সুপার এইটের ফিক্সচার চূড়ান্ত করা হয়েছিল। আইসিসি এই ফরম্যাট বেছে নেওয়ার একটি কারণ হচ্ছে– দর্শকরা ক্যারিবীয় দ্বীপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে যে ঝক্কি-ঝামেলা, সেটি কমানো। একইভাবে ভারতের বড় সংখ্যক দর্শকের কথা মাথায় রেখে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচও তাদের জন্য চূড়ান্ত করে রেখেছে। ম্যাচটি হবে গায়ানায়।

মূলত দর্শকদের টিকেট কাটার সুবিধা, দলগুলোর লজিস্টিক ঠিক করার সুবিধার কথা বিবেচনা করা হয়েছে গ্রুপিং নির্ধারণের ক্ষেত্রে। এবারও একই চিন্তা ছিলো আইসিসির। যেহেতু ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্রে খেলা হচ্ছে। কোন দল কোথায় খেলতে পারে তার আগেই একটা ধারণা লজিস্টিক কারণেই পেতে চেয়েছে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, আগামী ১৯ জুন থেকে শুরু হবে সুপার এইট রাউন্ড। দুটি গ্রুপ থেকে সেরা দুটি দল করে উঠবে সেমিফাইনালে। ফাইনালে ওঠার এই লড়াই শুরু হবে ২৭ জুন। পরবর্তীতে বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে ২৯ জুন বিশ্বকাপের শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading