আইন-আদালত

শিশু হত্যা মামলার রায় ১৩ বছর পর, আসামির মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রামের মিরসরাই থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (৯ জুন) চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. রবিউল আউয়ালের আদালত এ রায় দেন। একই মামলার আরেক আসামি কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লবকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশুর নাম কাজী মশিউর রহমান ওয়াসিম। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ৫ বছর। তারা বাবার নাম মোশাররফ হোসেন বাবুল।

২০১০ সালের ২২ নভেম্বর মিরসরাই উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়া তালুক কাজী বাড়ির পূর্ব পাশের ছনখোলা শিশু ওয়াসিমকে শ্বাসরোধ ও পরবর্তীতে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে আসামিরা মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার দিন রাতে ছনখোলা থেকে শিশুর মরদেহ বস্তায় ভরে করে পাশের ধানক্ষেতে ফেলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে শিশু ওয়াসিমকে না পেয়ে চাচা কাজী একরামুল হক মিরসরাই থানায় একই বছরের ২৩ নভেম্বর সাধারণ ডায়েরি করেন। সেদিন শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ পাশের ধানক্ষেতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন। ছনখোলা থেকে আসামির মোবাইল ও শিশুর জুতা উদ্ধার করা হয়। শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের পর মিরসরাই থানায় ভুক্তভোগীর চাচা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

মামলা চলাকালীন সময়ে আসামি কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিলের পর ২০১৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আসামি কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব, তার ভাই কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লব, বাবা ফজলুল কবির প্রকাশ হরমুজ মিয়া ও মা নুর জাহানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩০২ ও ২০১ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বিচার চলাকালীন আসামি ফজলুল কবির ও আসামি নুর জাহান বেগম মৃত্যুবরণ করেন।

চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়ায় ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি কাজী নাহিদ হোসেন পল্লবকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামি রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন, পরে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লব নামে এক আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading