যে কারণে ‘১১০’ নম্বর জার্সিতে খেললেন আলিসন
ফুটবলে সাধারণত খেলোয়াড়দের জার্সি নম্বর থাকে এক থেকে ৫০-এর মধ্যে, আর এর বেশি হলেও সেটা ১০০-এর মধ্যেই থাকে। বিশেষ কিছু ঘটনা ছাড়া এর ওপরে জার্সি নম্বর যায় না। আর একটা দলের মূল গোলরক্ষকরা সচরাচর পান ১ বা দুই ২ নম্বর জার্সিই। সেখানে মেক্সিকোর বিপক্ষে আলিসন বেকার পড়েছেন ১১০ নম্বর জার্সি।
এর কারণ, শনিবারের ম্যাচটি ছিল ব্রাজিলের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠার ১১০তম বার্ষিকী। ফুটবলের সবচেয়ে সফল জাতীয় দল ব্রাজিল, যারা বিশ্বকাপ জিতেছে পাঁচবার, তাদের ফুটবল ফেডারেশনের বিশেষ দিনটি উদযাপনের জন্যই বেছে নেয় আলিসনকে। আর তাই এই এক ম্যাচের জন্য তিনি পেয়েছেন বিশেষ ১১০ নম্বর জার্সি।
টেক্সাসের কাইল ফিল্ড স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় শুরু হয় ম্যাচটি। যেখানে বল দখলে আধিপত্য থেকে শুরু করে গোল, উভয়দিকেই এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। তবে দুই দফা লিড নিয়েও তাদের হতাশা উপহার দিয়ে সমতা টানে মেক্সিকো। সেখান থেকে যোগ করা সময়ের গোলে এলো ৩–২ ব্যবধানের জয়। ব্রাজিলের হয়ে একটি করে গোল করেছেন আন্দ্রেস পেরেইরা, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি ও এন্ড্রিক।
কেবলই প্রীতি ম্যাচ, তবে আসন্ন কোপা আমেরিকার ভালো প্রস্তুতির জন্য কোনো অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না এটি। কোপার অন্যতম প্রতিযোগী মেক্সিকোকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল সেই প্রস্তুতিটা শুরু করেছে। যদিও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো, রাফিনিয়া এবং লুকাস পাকেতাদের প্রধান তারকাদের বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজিয়েছিলেন কোচ দরিভাল জুনিয়র। তাদের ছাড়াই ম্যাচের শুরুতে লিড নিতে কষ্ট হয়নি কোপায় ৯ বারের শিরোপাধারীদের।
মাত্র ৫ মিনিটেই ব্রাজিলিকে লিড এনে দেন মিডফিল্ডার পেরেইরা। স্প্যানিশ ক্লাব জিরোনার ২০ বছর বয়সী উইঙ্গার সাভিও’র কাছ থেকে পাওয়া বলে বক্সে ঢুকে তিনজনকে বোকা বানিয়ে দুর্দান্ত এক শট নেন তিনি। সেই শট বাঁচানোর উপায় ছিল না মেক্সিকো গোলরক্ষকের। তবে পিছিয়ে পড়েও সমান লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল মেক্সিকানরা। তারা সমতায় ফেরার বেশ কয়েকবার কাছাকাছি গেলেও, সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। একই সময়ে রক্ষণে নড়বড়ে ছিল সেলেসাওরা–ও। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি।
বিরতির পর নেমেই ব্রাজিল দ্বিগুণ লিড আদায় করে নেয়। ৫৪ মিনিটে করা সেই গোলটি আসে আর্সেনাল ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির কাছ থেকে। গোল পেতে মেক্সিকোও যে কতটা মরিয়া ছিল সেটি টের পাওয়া যায় একটু পরেই। ৭৩ মিনিটে জুলিয়ান কুইনোনেসের গোলে প্রথমে তারা ব্যবধান কমায়। নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল না হলেও, যোগ করা সময়ে মেক্সিকোকে সমতায় ফেরান মার্টিনেজ আয়ালা। ফলে ২–২ সমতা নিয়ে ম্যাচ শেষ হতে পারে বলে মনে হচ্ছিল।
তখনই ঝলক দেখান ভিনিসিয়ুস-এন্ড্রিক জুটি। ভিনিসিয়ুসের অসাধারণ এক ক্রস থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন আগামী মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে খেলতে যাওয়া এই তরুণ। এ নিয়ে তিনি টানা তিন ম্যাচেই ব্রাজিলের হয়ে গোল করেছেন। আগের দুটি ছিল ইংল্যান্ড ও স্পেনের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে। শেষদিকে ব্রাজিলের খেলায় গতিও আসে ভিনি-এন্ড্রিক বদলি হয়ে নামার পরে। ২৯ মিনিটের উপস্থিতিতে গোল করা এন্ড্রিক ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আগামী ২০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে কোপা আমেরিকার আসর শুরু হবে। যেখানে ‘বি’ গ্রুপে ব্রাজিলের সঙ্গী কলম্বিয়া, প্যারাগুয়ে ও কোস্টারিকা। ব্রাজিল নিজেদের প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকার মুখোমুখি হবে ২৪ জুন। তার আগে অবশ্য আগামী ১২ জুন সেলেসাওরা আরেকটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে, ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচটি।