সারাদেশ

কোমলপানীয়তে চেতনানাশক মিশিয়ে অটোরিকশা চুরি করতো চক্রটি

কুমিল্লায় বিস্কটু ও কোমলপানীয়তে চেতনানাশক মিশিয়ে কৌশলে তা চালককে খাইয়ে দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চুরি করে নেওয়া চোর চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে অটোরিকশার যন্ত্রাংশসহ সাতটি চোরাই অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কুমিল্লা নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের শাকতলা এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম জাবেদ (২৬), শাকতলা উত্তরপাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. রুবেল (২৮), চান্দিনার মহিচাইল ইউনিয়নের অম্বরপুর এলাকার মো. আব্দুল রবের ছেলে মো. শরীফ (২৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার মৃত আরব রহমানের ছেলে আমির হোসেন (৩২) এবং একই এলাকার মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে মো. সোহাগ হোসেন (২৫)।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৭ মে (শুক্রবার) কুমিল্লা নগরীর টিক্কারচর এলাকার অটোরিকশা ড্রাইভার পরাণ অটোরিকশাসহ নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ এলাকায় হারাতলী এলাকায় পরাণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরাণের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, গত কিছুদিন ধরে কুমিল্লা মহানগরীসহ সদর দক্ষিন ও বুড়িচং থানা এলাকায় একটি চক্র প্রায় একইরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটায়। পরে পুলিশের অভিযানে পরাণ হত্যাকাণ্ডে জড়িত জাবেদকে গত সোমবার ( ২৭ মে) কুমিল্লা নগরীর গোবিন্দপুর এলাকা হতে গ্রেপ্তার করে।

জাবেদের দেওয়া তথ্যমতে আরও ২ আসামি শরীফ ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে চৌদ্দগ্রামের শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আমির হোসেনের গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে ৭টি অটোরিকশা, ৪টি অটোরিকশার ব্যাটারি এবং বেশ কিছু অটোরিকশার যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্যারেজ মালিক আমির হোসেন এবং তার সহযোগী সোহাগ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ চোরাই অটোরিকশা কিনে তাৎক্ষণিকভাবে রংসহ নানা রকম পরিবর্তন ঘটিয়ে অন্যত্র বিক্রয় করতো। দীর্ঘদিন ধরে সন্ধ্যায় মহানগরীসহ আশপাশ এলাকা থেকে কৌশলে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে সুকৌশলে অটোরিকশার ড্রাইভারকে বিশেষ উপায়ে তৈরি চেতনানাশক মিশ্রিত বিস্কুট/কোমলপানীয় খাইয়ে মহাসড়কে চালককে ফেলে দিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত চক্রটি বেশ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রাজেশ বড়ুয়া, তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জীবন বিশ্বাসসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading