ভোটের আগের দিন বাগেরহাটের দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগের দিন বাগেরহাটে থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সোমবার এ আদেশ জারি করেন কমিশনের উপসচিব মো. মিজানুর রহমান।
প্রত্যাহার করা পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন বাগেরহাটের ফকিরহাট মডেল থানার ওসি আশরাফুল আলম ও জেলা ডিবির ওসি স্বপন রায়। তাঁদের ইতিমধ্যে খুলনা রেঞ্জ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই দুই পলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শেখ ওয়াহিদুজ্জামান (মোটরসাইকেল প্রতীক)। এ বিষয়ে তিনি গতকাল রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
ওয়াহিদুজ্জামান ফকিরহাট উপজেলা যুবলীগের সদ্য স্থগিত হওয়া আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক। এই উপজেলায় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাস।
দুই ওসিকে প্রত্যাহার করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ওই আদেশে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন-২০২৪ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ফকিরহাট মডেল থানার ওসি আশরাফুল আলম ও বাগেরহাট জেলা ডিবির ওসি স্বপন রায়ের বদলে অন্য কোনো কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শকের কাছে পাঠানো ওই দাপ্তরিক চিঠিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানোর জন্যও বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের ওই চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও নির্বাচন কর্মকর্তাকেও।
চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান। তিনি বলেন, ওই দুই ওসিকে প্রত্যাহার করে খুলনা রেঞ্জ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে লিখিত অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ ওয়াহিদুজ্জামান উল্লেখ করেছেন, গত শনিবার গভীর রাতে ফকিরহাট মডেল থানার ওসি আশরাফুল আলম ও জেলা ডিবির ওসি স্বপন রায় তাঁর একনিষ্ঠ তিন কর্মীর বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রতিপক্ষ প্রার্থীর আনারস প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অথবা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এতে কর্মীদের পরিবারের সদস্য এবং নিজ নিজ এলাকার সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও নিরপেক্ষ ভোট প্রদানে প্রভাব পড়েছে। উপজেলার পিলজংগ (বেড়বাড়ী) গ্রামের এস এম খলিলুর রহমান, লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য হারুন-অর-রশিদ ও একই ইউনিয়নের শেখ রাহিম আহম্মদের বাড়িতে গিয়ে এমন হুমকি দেওয়া হয়।