সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের গণরুমে এক নবীন ছাত্রকে র্যাগিং, বিবস্ত্র করে কুরুচিপূর্ণ আচরণ ও রড দিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিধি অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি ও কম জড়িত থাকা এক শিক্ষার্থীকে সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) তদন্ত কমিটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পরবর্তীতে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইবির লালন শাহ হলের গণরুমে (১৩৬নং কক্ষ) এক ছাত্রকে বিবস্ত্র করে রাতভর র ্যাগিং করা হয়। এ সময় কথা না শুনলে তাকে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীকে উলঙ্গ করে পর্ণগ্রাফি দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করে নির্যাতনকারীরা। রাত ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে এ ঘটনা। এতে গুরুতর অভিযুক্ত দুইজন হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মোহাম্মদ সাগর। এ ছাড়া ইতিহাস বিভাগের উজ্জ্বল হোসেন কম জড়িত ছিল। তারা সকলেই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদিকে ওই কক্ষে প্রায়ই র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে বলে শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটির কাছে জানিয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনের গঠিত কমিটির ১৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ র্যাগিংয়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসন পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে উভয় কমিটি অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীর সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের নির্যাতনের মাত্রা বেশি ছিল।
এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, আমরা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। জড়িতদের শাস্তির সুপারিশ করে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রেরণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিধি অনুযায়ী তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, আমরা ঈদের আগেই তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছি। ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আমরা জড়িতদের বিষয়ে প্রশাসন বরাবর বিধি অনুযায়ী শাস্তির সুপারিশ করেছি।