ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধের দাবি
জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে সরকার বাস ভাড়া কমানোর চেষ্টা করছে। এমন সময়ে নতুন ভাড়া কার্যকর করার পরিবর্তে পবিত্র ঈদুল ফিতরের যাতায়াতে বাস, লঞ্চ, উড়োজাহাজসহ বিভিন্ন গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নামে নৈরাজ্য শুরু হয়েছে। এসব নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার প্রতিবছর ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যকারী গণপরিবহনগুলোকে কাগুজে বাঘের মতো হুঁশিয়ারি দেয়। কার্যকরভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এবারের ঈদের অনলাইন টিকিটে বিভিন্ন শ্রেণির পরিবহন কোম্পানিগুলো প্রকাশ্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অতীতের মতো কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশ পথে দিগুন-তিনগুন দামে বিমানের টিকিটি বিক্রি হচ্ছে। সড়কপথে বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটে ৫ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেড়গুন বাড়তি; ৮, ৯ ও ১০ এপ্রিল কোথাও দিগুন, কোথাও তিনগুন বাড়তি দামে বাসের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। নৌ-পথে বিভিন্ন রুটে কেবিনে ক্ষেত্রে দিগুন তিনগুন বাড়তি ভাড়ায় টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এমন ভাড়া নৈরাজ্য প্রকাশ্য ঘটলেও সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর এখনো কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের লোকজন ও গার্মেন্টস কর্মী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা ঈদের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়ছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে সংশিষ্ট বাস কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন পুলিশের আইজিপি। বিআরটিএ, বিআইডাব্লিউটিএ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এমন ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে কেউ এগিয়ে আসছে না।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ বলছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে ঈদযাত্রায় নিম্ন আয়ের লোকজনের বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, পণ্যবাহী পরিবহনে, ফিটনেস বিহিন সিটি বাসে, খোলা ট্রাকে, মোটরসাইকেলে, ট্রাকের পণ্যের ওপরে ঝুঁকিপূণ যাতায়াত কোনভাবেই বন্ধ করা যাবে না। যাত্রী স্বার্থ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।