জাতীয়

৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফাঁদ, চক্রের ৯ জন গ্রেপ্তার

রংপুর বিভাগের আট জেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরির নামে ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফাঁদ পাতা একটি এনজিওতে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা- এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর গোমস্তাপাড়ায় অগ্রসরমান আদর্শ যুব কর্ম সংস্থায় অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

রংপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি (ডিবি) শাহ নুর আলম পাটোয়ারী জানান, এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সোমবার রংপুর মহানগরীর গোমস্তাপাড়া এলাকায় আদর্শ যুব কর্ম সংস্থার অফিসে অভিযান চালাই। সেখান থেকে আমরা ৯ জনকে গ্রেপ্তার করি। এ সময় ওই অফিস থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ডেস্কটপ কম্পিউটার, একটি হার্ডডিস্ক, বিভিন্ন দলিলপত্র/ডকুমেন্ট, অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাজিরা খাতা ও বিভিন্ন রেজিস্টার জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, এনজিওটির জেলা কো-অর্ডিনেটর মো. রিয়াদ হোসেন, সুপারভাইজার প্রদীপ কুমার আচার্য, উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মো. ফজলে রাব্বি, হিসাবরক্ষণ অফিসার প্রদীপ রায়, সহকারী উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মো. সাজ্জাদ হোসেন ও মো. গোলজার হোসেন, কম্পিউটার অপারেটর মো. নজরুল ইসলাম, মো. আলমগীর হোসেন মালি, মো. মাহবুব হাসান লিমন।

তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এনএসআইয়ের সূত্র জানায়, সংস্থাটি ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভলাপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইআরিডিপি) কর্মসূচির মাধ্যমে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৫৩৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরির প্রকল্প নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করে। প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বাস্তবায়নে ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা হিসাবে ৫৩৫টি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৪৫৮ কোটি ২২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এজন্য সংস্থাটি ২০২২ সালে দরপত্র আহ্বান করে।

দরপত্রের শিডিউলের মূল্য ধরা হয় ৪০ হাজার টাকা। দরপত্রে বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রথম ধাপে ২৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ছাদ নির্মাণের পর ২৫ শতাংশ ও তৃতীয় ধাপে কাজ শেষ হওয়ার পর ৫০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করা হবে। প্রথম ৫০ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করবে তুরস্ক ও ফ্রান্সের দাতা সংস্থা, অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ মূল্য কাজ শেষ হওয়ার পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পরিশোধ করা হবে মর্মে সংস্থাটি প্রচারণা চালায়। এরই মধ্যে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা এভাবে তহবিল সংগ্রহ করে তারা।

এনএসআই সূত্র জানিয়েছে, সংস্থাটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন নেই। এছাড়া অনুমোদিত এলাকার বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সংস্থাটি তাদের সকল প্রচার প্রচারণায় সরকারি মনোগ্রাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রজেক্ট প্রপোজাল ছিল না তাদের। সংস্থাটি দরপত্র আহ্বানের যথাযথ নিয়মও অনুসরণ করেনি। এছাড়াও তারা জমি ক্রয়ে অনিয়ম করেছে। সংস্থাটির কোনো বৈধ কাগজপত্রও ছিল না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading