ঝিনাইদহের সদর উপজেলাকে রেল সংযোগের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্য মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল। একই সঙ্গে তিনি জেলায় হার্ট ও কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষনের ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব দাবি তুলে ধরেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সম্মুখযোদ্ধা ও জাতীয় নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করেন।
সংসদে উপস্থিত সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের সব জেলাকে রেল সংযোগের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা রেল সংযোগের আওতার বাইরে রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে ঝিনাইদহ শহর রেল সংযোগের আওতায় ছিলো। কিন্তু পরববর্তীতে সেই রেললাইনটি তুলে দেওয়া হয়।
পদ্মা রেল সেতুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ফরিদপুরের মধুখালী থেকে মাগুরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাগুরা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা জাতীয় রেল সংযোগের আওতায় চলে আসবে। আর সেখান থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হলে জেলার মোবারকগঞ্জ স্টেশনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হবে। এতে করে অত্র এলাকার মানুষের চলাচলের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং সেখানে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের দেশব্যাপী বিপণন সহজতর হবে। এর ফলে জেলার মানুষ দেশের জাতীয় জিডিপিতে আরও বেশি মাত্রায় অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।
জেলায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার নির্বাচনী এলাকা ঝিনাইদহ সদরে একটি ২৫০ শয্যা এবং হরিনাকুণ্ডু উপজেলায় একটি ৫০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু এসব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও অন্যান্য সহায়ক জনবলের ঘাটতি রয়েছে। এর পাশাপাশি নানা ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জামেরও ঘাটতি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হূদরোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও জটিল কিডনি রোগে আক্রান্তদের ভালো মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে ভুক্তভোগীদের ঢাকা ও ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। কিন্তু দূর দূরান্তের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি সবার নেই। তা ছাড়া এসব রোগের চিকিৎসা গ্রহণে দেরি হলে রোগীর প্রণহানির ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভালোমতো আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। সে জন্য তিনি এসব রোগের চিকিৎসায় জেলায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।