সারাদেশ

সুন্দরবনের ২৫ কেজি ওজনের এক মাছের দাম ৬ লাখ টাকা

সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবন এলাকার মালঞ্চ নদী থেকে ২৫ কেজি ওজনের একটি জাভা ভোল মাছ পেয়েছেন জেলেরা। তারা মাছটির দাম হাঁকছেন ছয় লাখ টাকা। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত মাছটির দাম উঠেছে পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা। তবে সিন্ডিকেটের কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম না উঠায় মাছটি বিক্রি করতে নারাজ সংশ্লিষ্ট জেলেরা।

গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বনবিভাগ থেকে পাশ নিয়ে সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরতে যান উপকূলের ৯ জন জেলে। রাতে পশ্চিম সুন্দরবনের মালঞ্চ নদীর ফিরিঙ্গী এলাকা থেকে ২৫ কেজি ৩৬০ গ্রাম ওজনের মাছটি ধরা পড়ে শুকুর আলীসহ সঙ্গীয় জেলেদের জালে।

মাছটির দাম পাঁচ লাখ ২০ হাজার বলেছেন শ্যামনগর থানার মুন্সীগঞ্জ এলাকার আবু মূসাসহ আরও কয়েকজন ব‍্যবসায়ী। কাঙ্ক্ষিত দামে মাছটি বিক্রি হলে ৯ জন জেলের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি হবে বলে জানা গেছে।

বাবু নামে এক জেলে বলেন, জীবনে প্রথম এই মাছ পেয়েছি। মাছটি পেয়ে আমারা খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু মাছ ব‍্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে সঠিক দাম উঠছে না। মাছটি কিনতে বাইরের ব্যবসায়ীদের আসতে দিচ্ছে না স্থানীয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। সেজন্য পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি দাম উঠছে না। তবে আমরা চেষ্টায় রয়েছি বাইরের থেকে ব্যবসায়ীদের এনে মাছটি যাতে সঠিক দামে বিক্রি করতে পারি।

অপর জেলে শুকুর আলী বলেন, এই মাছের ফুলকার দাম অনেক বেশি। যার কারণে মাছটির দাম এত বেশি। মাছের ফুলকা দিয়ে ওষুধ তৈরি করা হয়। সাধারণত মাছটি ওষুধ কোম্পানি কিনে নেন মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। তাছাড়া চায়না, থাইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে এই মাছের ফুলকা দিয়ে সুপ তৈরি হয়। সাধারণত এই মাছের ফুলকা ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় পার হলেও এখানকার স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে মাছটি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বড় ব্যবসায়ীদের আনার চেষ্টা চলছে। মাছটির ন্যায্য দাম পেলে আমরা খুশি হব।

স্থানীয় মাছ ব্যসায়ীরা বলেন, জাভা ভোল মাছ খুব একটা পাওয়া যায় না। এই মাছের এতো দাম মূলত এর ওষুধি গুণের কারণে। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলো এ মাছ কিনে নেন। জাভা ভোল মাছের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে ক্যানসারসহ নানান রোগের ওষুধ তৈরি করা হয়।
শ্যামনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার বলেন, সুন্দরবনের নদীতে জেলেদের জালে ২৫ কেজির জাভা মাছটির বিষয়ে জেনেছি। এই মাছের ফুলকা অত্যন্ত মূল্যবান, সাধারণত এই ফুলকা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, জেলেদের ন্যায্য দাম পাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। সাধারণত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাম তুলে তারপরে এটি ক্রয় করে থাকেন। তবে জেলেরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সে বিষয়ে খেয়াল করা হবে।

জাভা ভোল মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস’। সাধারণত থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরে এই মাছের ব্যাপক চাহিদা আছে। সেখানকার রেস্টুরেন্টে সুপ তৈরিতে মাছটির বেশ খ্যাতি রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading