জাতীয়নির্বাচনসর্বশেষ

যেভাবে গঠিত হবে নতুন মন্ত্রিসভা

নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি।

নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে দুটি স্থগিত রয়েছে। বাকি ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। এর আগের চারবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা দায়িত্ব নিচ্ছেন— এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই আওয়ামী লীগে।

আজ (সোমবার) দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, টানা চতুর্থবার ও মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। ভারত, রাশিয়া, চীন, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা সাক্ষাৎ করে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গেজেট জারির পর তাদের শপথ পড়ানো হবে। এরপর সংসদ সদস্যরা বৈঠক করে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন করবেন। রাষ্ট্রপতি সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানো হবে। এরপর সংসদ সদস্যদের ভেতর থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আর এর মধ্য দিয়েই নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হবে।

মন্ত্রিসভা গঠন প্রসঙ্গে সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। যে সংসদ সদস্য, সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতীয়মান হবেন, রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্ধারণ করবেন, সেভাবে অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

কবে গঠিত হতে পারে?
আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হচ্ছে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে গঠিত হয়ে যাবে।

কেমন ছিল টানা ৩ মেয়াদের মন্ত্রিসভা?
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২৬৩টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন, গঠন করেন ৩২ সদস্যের মন্ত্রিসভা। এর ১৮ দিন পর মন্ত্রিসভায় আরও ছয় জন যোগ হন। এরও দুই বছর ১০ মাস পর আরও দুজনকে মন্ত্রী করা হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মোট ১৪৭টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। বিএনপি ও এর নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচন বর্জন করে। ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পায় আওয়ামী লীগ ও এর শরিক দলগুলো।

ওই বছরের ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। তখন অধিকাংশ পুরোনো মন্ত্রী বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নতুন ও আগের সরকারের সময় দলের বাদ পড়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে সরকার গঠন করা হয়।

সেই মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুজন উপমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রিসভার আকার আরও বাড়ানো হয়।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে, এ নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা ২৮৮টি আসন পায়। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি। তিনটি আসন পায় অন্যরা।

২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভার আকার হয় ৪৭ জনের। এর মধ্যে নতুন মুখ ছিলেন ৩১ জন। পাশাপাশি ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমন অনেকেও এই মন্ত্রিসভায় স্থান পান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading