ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির কান্নাকাটি করে ভোট চেয়েছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ক’দিন আগে তাহজীব আলম সিদ্দিকী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে গনসংযোগকালে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নাকাটি করেন।
তার এই কান্নাকাটির ভিডিও নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই ট্রল করেছেন, আবার কেউ শান্তনা দিয়েছেন। কেউবা আবার আবেগাপ্লুত হয়েছেন। ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি ওই দিন বলেন, “আমি সবচে ঝিনাইদহের মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালো বেসেছি, আমি সম্মান দিয়েছি, আমি মর্যাদা দিয়েছে”। “আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন না। আমি আপনাদের বলছি আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন না”। “আমার সঙ্গে প্রতারণা হচ্ছে। আমার সঙ্গে ষড়যন্ত্র হচ্ছে” তিনি নাম উল্লেখ না করে বলেন, “আমি শুধু তাদের দুর্নীতি করতে মানা করেছি। আমি বলেছি “টিআরের টাকা দিয়ে দ্যান, কাবিখা টাকা দিয়ে দ্যান। মসজিদের টাকা লুটপাট করেন না। স্কুলে নিয়োগ দিয়ে গরীবের টাকা নিয়েন না। গরিবের টাকাটা খেয়ানত করেন না।
আপনাদের বয়স হয়েছে, আপনারা মৃত্যু পথযাত্রী। আল্লাহর কাছে সবার জবাবদিহীতা করতে হবে। আমি তাদের ভালো কথা বলার জন্য দীর্ঘ পথ যারা আমার সঙ্গে হেটেছে, যিনি হেটেছেন, তারা আমাকে পরিত্যাগ করেছে”। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন “হে আল্লাহ আমি গুনাহ করতে চাইনি, হে আল্লাহ, আমি মানুষের টাকা খেয়ানত করতে চাই নি। আজকে জনগনকে কি আজ আমার থাকে থাকবে না। জনগন কি আমার পক্ষে থাকবে না। মানুষ কি সততার পক্ষে থাকবে না। হে আল্লাহ তুমার কাছে আমি, তুমার কাছে আমি বিচার দিয়ে গেলাম। আমি গ্রামবাসির কাছে বিচার চেয়ে গেলাম”। ভাইরে আমার, আমার দোষ হলো আমি সৎ, আমার দোষ হলো আমি সচ্ছ। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। আপনারা কি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন ? হে আল্লাহ আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করলাম। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করলাম”। এরপর তিনি নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, “আপনারা কি নৌকার পক্ষে ভোট দিবেন ? আপনারা কি শেখ হাসিনার পক্ষে ভোট দিবেন ? আপনারা কি উন্নয়নের পক্ষে আছেন ? আপনারা কি জয়বাংলার পক্ষে আছেন। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু”। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভিডিও পোস্ট করা হলে ১৪৯ জন নানা ভাবে মন্তব্য করেন। তার মধ্যে কামরুল হাসান নামে এক ব্যক্তি কমেন্টস করেন, “আপনার মত একজন এমপি ১০ বছর খমতায়, কত রুগি মারা যাই মেডিকেল অভাবে এত টাকা দিয়ে কি করবেন ১৫ বছরের ঝিনাইদহ কোন উন্নয়ন নেই” আশরাফুল ইলম নামে এক আ’লীগ সমর্থক লেখেন, “ টি আর, কাবিখার চাল গম গুলো যদি চুরি করে না খেতেন তাহলে আজ এই কান্না কাটি করা লাগত না। আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের কোন মূল্যায়ন করেননি, শুধু চিটার পেলেছেন”।
আশরাফুল ইসলাম সাইফুল নামে এক ব্যক্তি লেখেন, তাহলে আপনি একবার ভাবেন দশ বছর ক্ষমতায় থেকে ঝিনাইদহ মানুষের কথাটা উন্নয়ন আপনি করেছেন। এখন আপনার মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কান্না করতে হচ্ছে। ঝিনাইদহের আপামর জনতা আপনাকে বয়কট করেছে। ঝিনাইদহের বুঝতে শিখেছে যে ১০ বছর কিছু করতে পারে নাই আগামীকাল ৫ বছরে সে কিছু করতে পারবে না। আপনার লজ্জা থাকলে আপনিও নির্বাচনী প্রচারণা যাবেন না”। আশিকুর রহমান মন্তুব্য করেন, “ পোস্ট কারী জামাত বিএনপির এজেন্ডা তুমি”। এই পোষ্টোর ১৪৯ জন কমেন্টসকারীরা প্রায় সবাই নেতিবাচক মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য ঝিনাইদহ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে।