লাইফস্টাইল

ছুটির দিন উপভোগের পাঁচ উপায়

ছুটির দিনটি কি শুধু শুয়েবসে কাটানোর দিন? এ প্রশ্ন যদি আপনি কাউকে করেন, তাহলে বেশির ভাগ মানুষই উত্তরে বলবেন, ‘হ্যাঁ’। আমরা অনেকেই ছুটির দিনে শুয়েবসে থেকে বিরক্ত হয়ে পড়ি। ফলে ছুটির দিনটা আমাদের একঘেয়েমিপনা থেকে মুক্তি তো দেয়ই না, উল্টো আরও বাড়িয়ে দেয়। আর একঘেয়েমিপনা থেকে সৃষ্টি হয় ক্লান্তি ও অবসাদ। অথচ বিশেষ কিছু কাজের মাধ্যমে ছুটির দিনটাও দারুণভাবে উপভোগ করা যায়।

পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান

পরিবারের সঙ্গে দারুণ সময় কাটানো যায় ছুটির দিনে। সন্তানের সঙ্গে খেলুন। সবাই মিলে কাছেপিঠে কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসুন। বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও বসে একটু আড্ডা দিয়ে আসতেও পারেন। পরিবার আর কাছের মানুষদের ফোন করুন। তাঁদের খোঁজখবর নিন। জম্পেশ আড্ডায় গলা ছেড়ে গান গেয়েও ছুটির বিকেলটা পার করা যায়।
ছুটির দিনে ভালোবাসার মানুষটিকে উপহার দিতে পারেন। তার সঙ্গে কাটানো আপনার একান্ত কিছু সময়ই হতে পারে দুজনের জন্যই ছুটির দিনের সেরা উপহার। পছন্দের মানুষটিকে নিয়ে কোথাও গিয়ে ভালোমন্দ খেয়ে আসতে পারেন। মানুষটির সঙ্গে একটু আলাদা সময় কাটালে সম্পর্কের বাঁধনটাই শুধু দৃঢ় হবে না, নিজেও পাবেন মানসিক প্রশান্তি।
পোষা কুকুরটার সঙ্গেও কাটাতে পারেন দারুণ সময়। পোষা প্রাণীটার যত্নআত্তিও করতে পারেন ছুটির দিনে।

নতুন কিছু শিখুন

ধরুন, ক্যাম্পাস লাইফে গিটার শেখার খুব শখ ছিল। পেশাগত জীবনে প্রবেশ করার পর থেকে নানা ব্যস্ততায় সে শখ নিয়ে নাড়াচাড়া করা আর হয়ে ওঠেনি। ছুটির দিন তাহলে আপনাকে এনে দিতে পারে সেই সুযোগ। গিটার বাজানো শেখা শুরু করতে পারেন ছুটির দিনগুলোয়। শখটাও পূরণ হবে, আবার একঘেয়েমিপনা থেকেও বের হতে পারবেন।

এ ছাড়া শিখে ফেলতে পারেন জীবনমুখী নানা রকম স্কিল। সাঁতার শেখার জন্য ছুটির দিন একদম যথার্থ। নতুন ভাষা শেখার দিকেও মনোযোগ দিতে পারেন। সে ভাষা যে শুধুই মানুষের মুখের বুলি হতে হবে, এমনটাও নয়। কম্পিউটারের জনপ্রিয় কিছু ভাষা, যেমন সি, জাভাস্ক্রিপ্ট বা পাইথনও শেখা শুরু করতে পারেন। প্রতিযোগিতামূলক এই দুনিয়ায় টিকে থাকার দৌড়ে এসব স্কিল আপনাকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।

সৃজনশীলতার চর্চা করুন

একঘেয়েমিপনা থেকে মুক্তি পেতে সৃজনশীল কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখার কোনো বিকল্প নেই। ছুটির দুপুরে রং-তুলি আর ক্যানভাস নিয়ে বসে পড়তে পারেন। এ জন্য দক্ষ শিল্পী হওয়ারও প্রয়োজন নেই। মনের ক্যানভাসে যা ভেসে ওঠে, তা-ই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন রং ও তুলির আঁচড়ে। কিংবা খাতা-কলম হাতে নিয়ে লিখতে বসুন মনের অন্তরালে পড়ে থাকা কথাগুলো। আপনার ভেতরে জমে থাকা শব্দগুলো থেকে তৈরি হতে পারে কোনো কবিতা বা গল্প।

পড়ে থাকা কাজগুলো সেরে ফেলুন

পরে করবেন বলে ঠিক করেছেন, কিন্তু নানা ব্যস্ততায় আর করা হয়ে ওঠেনি—এমন কাজগুলো করে ফেলতে পারেন ছুটির দিনে। যেমন ধরুন, ঘর কিংবা টয়লেট পরিষ্কার করা। কাপড় ইস্তিরি করা বা ওয়ার্ডরোব গোছানো। বাসার সামনের লনের ঘাস কেটে অথবা ফুলগাছগুলোর গোড়ায় নিড়ানি দিয়েও ছুটির সকালটা কাজে লাগাতে পারেন। অথবা ইউটিউব দেখে নতুন কোনো রান্না চাপিয়ে দিতে পারেন আর দাওয়াত দিতে পারেন বন্ধুদের।

নিজের জন্য কিছু করুন

পেশাগত জীবনের নানা ব্যস্ততায় নিজেকে সময় দেওয়াটাই দায় হয়ে ওঠে! ছুটির দিনটি আমাদের সামনে সেই সুযোগ এনে দেয়। নিজেকে কোনো কিছু উপহার দিতে পারেন এই দিনে। সিনেমা, প্রদর্শনী দেখতে যেতে পারেন। আবার নতুন একটা বই পড়ে ফেলতে পারেন।
ধোঁয়া ওঠা উষ্ণ এক কাপ কফিতে চুমুক দিতে দিতে ছুটির বিকেলটা পার করা যায়। খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে মেঘ আর রোদের খুনসুটি দেখেও মনটাকে প্রশান্ত করা যায়।

ছুটির দিনে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে নিজেকে বন্দী না রেখে একটু বাইরে বের হতে পারেন। বাসার আশপাশে কোথাও, যেমন মাঠ, পার্ক কিংবা কোনো ক্লাব থেকে হেঁটে আসুন। সকালে বা বিকেলে একটু ব্যায়াম বা জগিং করে নিতে পারেন। খুব ভালো হয় যদি বাসা থেকে দূরে গিয়ে কোথাও ঘুরে আসা যায়। শহর থেকে বের হয়ে খানিক দূরে কোনো অজপাড়াগাঁয়েও ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। একটা দিনের জন্য গ্রামের সরল মানুষদের সঙ্গে মিশতে পারেন। দেখবেন নিজের কাছেই নিজেকে নির্ভার লাগছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Discover more from ঝিনেদা টিভি

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading