মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে তিনটি পরামর্শ দিলেন ‘শীর্ষ চোর’
ঢাকার মোটরসাইকেল চোর আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবির তালিকায় থাকা ‘শীর্ষ’ এই মোটরসাইকেল চোরকে গত ২৮ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে নিজেকে ‘শীর্ষ চোর’ দাবি করে জিজ্ঞাসাবাদে মোটরসাইকেল চুরি ঠেকাতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তার মতে একজন মোটরসাইকেলচালক যদি তিন ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় তাহলে মোটরসাইকেল চুরি ঠেকানো সম্ভব।
মোটরসাইকেলের চুরি ঠেকাতে আবুল কালাম আজাদের প্রথম পরামর্শ হচ্ছে মোটরসাইকেলে অ্যালার্ম লাগানো। এতে কেউ মোটরসাইকেল স্পর্শ করলেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে। এরফলে চোর ভয়ে মোটরসাইকেলটি চুরি করতে সাহস পাবেন না।
দ্বিতীয়ত, জিপিএস ট্র্যাকার লাগানো যেতে পারে। এর মাধ্যমে খুব সহজে মোটরসাইকেলের অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব।
আর তৃতীয়ত, উন্নত মানের ‘ডিস্ক লক’ ব্যবহার করা হলে সেটি ভাঙতে অনেক সময় লাগে। এ ধরনের তালা লাগানো থাকলে চোর ঝুঁকি নিতে চায় না।
জিজ্ঞাসাবাদ থেকে জানা যায়, গত ১৩ বছরে আবুল কালাম আজাদ প্রায় দুই শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি করেছেন। ধরা পড়েছেন অন্তত ৪৫ বার। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ৫৩টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজাদকে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এর আগে গত ৫ অক্টোবর তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছিলেন। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, অনেক মোটরসাইকেলচালক ‘হ্যান্ডল লক’ করে মোটরসাইকেল রেখে চলে যান। যা নিরাপদ নয়। কারণ ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড সময় লাগে এই ধরণের লক ভেঙে চুরি করতে । আবার অনেকেই ‘ঢালাই তালা’ ব্যবহার করেন। এসব তালা ভেঙে মোটরসাইকেল চুরি করতে দেড় মিনিটের মতো লাগে।
আবুল কালাম আজাদ নিজেকে ‘শীর্ষ চোর’ দাবি করে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, মোটরসাইকেল চুরিতে তার মতো পারদর্শী আর কেউ নেই। তার কাছ থেকে মোটরসাইকেল চুরি শিখে এখন অনেক শিষ্য বড় চোর হয়েছেন। তারা এখন আলাদা আলাদা চক্র গড়ে তুলেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চোর মাদারীপুরের শিবচরের জসীম উদ্দিন। জসীমের স্ত্রীর বড় বোনের স্বামী (ভায়রা) শাহ আলমও তার শিষ্য।
ডিবির ওয়ারী অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহফুজুর রহমান জানান, আজাদ ৫ অক্টোবর জামিনে মুক্ত হওয়ার পর ওয়ারী অঞ্চলে অন্তত ৮টি মোটরসাইকেল চুরি করেছেন। ওই ঘটনাগুলোর তদন্ত করতে গিয়ে আবুল কালামকে তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়।